করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে প্রায় থমকে আছে সময়। দীর্ঘ ১৮ মাসেরও অধিককালব্যাপী বন্ধ রয়েছে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। জীবন ও জীবিকাও চলছে এক প্রকার থেমে থেমে। বছর ঘুরে এসেছে আবারও আগস্ট।
আগস্ট বাঙালির জীবনে এক দুঃসময়েরই যেন অপর নাম। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হারিয়ে এতিম হয়ে পড়েছিল গোটা বাঙালি জাতি। ২০০৪ সালের এ আগস্টেই জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা করে তার জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দিতে চেয়েছিল ঘাতকের দল। তবে তারা সফল হতে পারেনি সেদিন। লোমহর্ষক সে হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। তিনিই আজকের বাংলাদেশের চতুর্থবারের প্রধানমন্ত্রী। করোনার এ দুঃসময়েও দেশকে রেখেছেন সঠিক পথে। অর্থনীতির হাল ধরেছেন যেমন শক্ত হাতে, তেমনই সব ধরনের উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদকে মোকাবেলা করেছেন অত্যন্ত যোগ্যতা ও সাহসিকতার সঙ্গে।
সম্প্রতি তালেবান কর্তৃক আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের কারণে গোটা বিশ্বের নজর এখন সেদিকে। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তালেবানদের নির্মূল করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েও সফল হতে না পেরে এক প্রকার তাদের হাতে ক্ষমতা ছেড়েই দেশ ছেড়েছে মার্কিন সেনারা। উগ্র ও কট্টরপন্থী তালেবান আবার দখল করেছে আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা। পশ্চিমা জোট কোনোভাবেই তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। মার্কিনীরা আফগানিস্তানের জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে না পারলেও জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশে সেই কাজ করে দেখিয়েছেন। এদেশ থেকে জঙ্গিবাদকে অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে নির্মূল করেছেন তিনি। উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের শেষ চিহ্নটুকুও মুছে ফেলার প্রচেষ্টা এখনো জারি রয়েছে তার। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর যে সাফল্য, যে অর্জন, সেটা অকল্পনীয়। বিশ্বের বহু দেশ এটা করতে পারেনি। ১৭ কোটি মানুষের দেশে জঙ্গি সদস্য এবং তাদের আস্তানা খুঁজে বের করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মেধাবী ও চৌকস অফিসাররা যে অপারেশনগুলো করছেন বাংলাদেশে, তা বিরল ঘটনা। তাদের কাজের প্রধান উত্সাহদাতা হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অথচ অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও অতীতে বিস্তার ঘটেছিল জঙ্গিবাদের। তত্কালীন বিএনপি সরকারের আমলে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জামআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামের একটি জঙ্গি সংগঠন পরিকল্পিতভাবে দেশের ৬৩ জেলায় একই সময়ে বোমা হামলা চালায়। মুন্সীগঞ্জ ছাড়া সব জেলায় প্রায় ৫০০ পয়েন্ক্ষে বোমা হামলায় দু’জন নিহত ও অন্তত ১০৪ জন আহত হন। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা সংশিস্নষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের আগে থেকেই জঙ্গিরা নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে তাদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছিল। কিন্তু বিষয়টি ততোটা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয়নি সেসময় এবং জঙ্গিদের বিরুদ্ধেও কঠোর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তত্কালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদেরও ছিল গা-ছাড়া ভাব। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই মূলত সারাদেশে একযোগে হামলার পরিকল্পনা করেছিল জেএমবি বা জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ।
বিএনপি সরকারের সময় সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হয় ঠিক তার আগের বছর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। ওইদিন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এক জনসভায় বক্তব্য শেষ করার পরপরই তাকে লক্ষ্য করে এক ডজনেরও বেশি আর্জেস গ্রেনেড ছোড়া হয়। লোমহর্ষক সেই হামলায় শেখ হাসিনা প্রাণে রক্ষা পেলেও আইভি রহমানসহ তার দলের ২২ নেতাকর্মী নিহত হন এবং পাঁচশ’র বেশি মানুষ আহত হন। শেখ হাসিনা নিজেও কানে আঘাত পান। এর আগেও ২০০০ সালে কোটালীপাড়ায় হেলিপ্যাডে এবং শেখ হাসিনার জনসভাস্থলে ৭৬ কেজি ও ৮৪ কেজি ওজনের দু’টি বোমা পুঁতে রাখা হয়। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের উর্বর ক্ষেত্র হিসেবে পরিণত হয়েছিল তখনকার বাংলাদেশ। এরপরই ক্ষমতায় আসেন শেখ হাসিনা। তার হাত ধরেই শুরু হয় দিন বদলের পালা। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন শেখ হাসিনা।
তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের মাধ্যমে তিনি বর্তমানে বিশ্বশান্তির দূত ও মানবপ্রেমী হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদে (২০০৯-২০১৩) জঙ্গিবাদ দমনে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি থেকে শুরু করে সংশিস্নষ্ট সব ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই গৃহীত কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ জঙ্গিমুক্ত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনার দেখানো পথ এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মতো জঙ্গিবাদের রসাতলে পতিত না হয় যেন, সেই প্রত্যয় নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে এ দেশের সব মন্ত্রণালয়। মানবসম্পদ ও জীবনের নিরাপত্তা প্রদান, উদ্ধার অভিযান বা তত্পরতা, অপরাধ দমন, অপরাধী শনাক্তকরণ, জল ও স্থল সীমান্ত নিরাপত্তা, চোরাচালান রোধ, প্রবাস ও অভিবাসন সম্পর্কিত নীতিমালা বা চুক্তি প্রণয়ন, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধ, মাদকদ্রব্য চোরাচালান রোধ, মানবপাচার রোধ ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। নাগরিকের জন্য একটি নিরাপদ, সুন্দর, সুখী ও শান্তিপূর্ণ আবাসভূমি নির্মাণের লক্ষ্যে রাষ্ট্রনায়ক নিরলস ও বদ্ধপরিকর।
বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদে (২০০৯-২০১৩) জঙ্গিবাদ দমনে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিসহ উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম গ্রহণ ও সমন্বয়ের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্কালীন প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে সভাপতি করে ১৭ সদস্যের জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ এবং প্রতিকার কমিটি গঠন করেন শেখ হাসিনা। তার নির্দেশনায় ও নেতৃত্বেই আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী নানা অপরাধের জন্য দ্রম্নত বিচার আইন-২০১৪ পাশ করা হয়েছে। মোবাইল কোর্ট আইন ও বিধিমালা প্রক্রিয়াধীন আছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের বিধিমালা-২০১৪ প্রণীত হয়েছে। সব ধরনের উগ্রবাদ নির্মূলে বাহিনীকে শক্তিশালী করা হয়েছে। ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশে ১ লাখ ৬১ হাজার ৩শ ৩ জন জনবল ছিল। বর্তমানে তা ২ লাখ ৫ হাজারে উন্নীত হয়েছে। ২০০৮ সালে নারী পুলিশ সদস্য ছিল মাত্র ২৫২০ জন। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১১ হাজার ৭৬৭ জন। পুলিশবাহিনীতে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ৫০ হাজার পদ সৃজনের নীতিগত সিদ্ধান্তের পর পর্যায়ক্রমে ৫০ হাজার পদ সৃষ্টির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ছাড়াও পুলিশ পরিদর্শক পদকে ২য় শ্রেণি থেকে ১ম শ্রেণিতে এবং উপ-পুলিশ পরিদর্শককে ৩য় থেকে ২য় শ্রেণিতে উন্নীতকরণ এবং পুলিশের নতুন নতুন উইং সৃষ্টি হয়েছে। যেমন, এ বাহিনীতে শিল্পাঞ্চল পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ, নৌপুলিশ, পিবিআই, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ, ৩০টি ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার এসপিবিএনসহ মোট ১০টি নতুন ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়াও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশ পুলিশের কর্মরত থাকার ব্যাপারেও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ৭টি ফর্মড পুলিশ ইউনিটে ১২১১ জন পুলিশ সদস্য কর্মরত আছেন। এর মধ্যে ১৬০ জন নারী সদস্য। নতুন ২টির্ যাব ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয়েছে। র্যাবের জন্য ২টি হেলিকপ্টার ক্রয় করা হয়েছে। পুলিশের জন্য ২টি হেলিকপ্টার টিওঅ্যান্ডইতে অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম চলমান।
শেখ হাসিনার শাসনামলেই পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) এলআইসি শাখা গঠন করা হয়। বিশেষ অপরাধ তদন্তের জন্য গঠন করা হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ডিএমপির কাউন্ক্ষার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের অভিযানে আসে একের পর এক সাফল্য। কাউন্ক্ষার টেরোরিজমের চৌকস অফিসারদের একের পর এক সফল অভিযানে নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতারা গ্রেফতার কিংবা নিহত হয়। আলোচিত মামলাগুলোর তদন্তও সফলভাবে শেষ করেছে পুলিশ। এতে কমেছে জঙ্গি তত্পরতা। একইসঙ্গে সংঘবদ্ধ অপরাধ, হত্যা, ডাকাতি, ছিনতাই ও দস্যুতার হারও কমেছে অনেকখানি। বিশেষত বন ও জলদস্যু এবং সর্বহারাদের আত্মসমর্পণ দেশের অন্যতম অবদান যা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। অন্যদিকে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাজকে গতিশীল করতে শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের আগে ওই সরকারের সংসদ অধিবেশনের শেষে এসে ৫ গ্রামের বেশি ইয়াবা পাওয়া গেলে মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮’ পাস করা হয়েছে।
২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গি দমনে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করায় জঙ্গি দমনে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ ‘রোল মডেল’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বাংলাদেশে জঙ্গি তত্পরতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সবসময়ই তত্পর রাখা হচ্ছে। জঙ্গি সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর বিচারে ফাঁসি হয়েছে কয়েকজন দুর্ধর্ষ জঙ্গি সদস্যের। জঙ্গিদের অনলাইন তত্পরতা রোধে এখন প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে নিশ্চিন্তে কাজ করছেন কর্মকর্তারা। পাশাপাশি ফেসবুক, গুগলসহ বিভিন্ন অনলাইন পস্নাটফর্ম এবং স্মার্টফোন অ্যাপ নির্মাতাদের সঙ্গে এদেশের পুলিশ প্রশাসনের সখ্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যাতে প্রয়োজন হলে দ্রম্নত সাইবার ক্রাইমের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া যায়। আসলে বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে এলিট ফোর্স র্যাব, বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াটসহ পুলিশের সব ইউনিট ও গোয়েন্দা সংস্থাকে জঙ্গিবিরোধী অভিযান ও কার্যক্রম জোরদার করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
২০১৬ সালের হোলি আর্টিজান হামলার পর এ পর্যন্ত যতগুলো অপারেশন পরিচালিত হয়েছে তার সবগুলো থেকেই জঙ্গিগোষ্ঠী আঘাত হানার পূর্বে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাদের পরিকল্পনা নস্যাত্ করে জঙ্গি আস্তানাসমূহ গুঁড়িয়ে দিয়েছে। জননিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত হওয়ায় ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৭টি সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জঙ্গিবাদ এবং জঙ্গিবাদের অর্থায়নে জড়িতদের কার্যকরভাবে দমনের লক্ষ্যে সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯ (সংশোধনী-২০১৩) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ প্রণয়ন করেছে। সরকারের আন্তরিকতা এবং গৃহীত নানা পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বর্তমানে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। শেখ হাসিনা সব সময় অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উজ্জীবীত একজন মানুষ। উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গঠনে তিনি বদ্ধ পরিকর। এই জায়গাতে তার ধারে-কাছে কেউ নেই। তিনি অনন্য, অসাধারণ।